ফাদার রবার্ট এস্টোরিনো (সিঙ্গাপুর, ২০১২ খ্রিস্টাব্দ) |
আজ
হতে সাতাত্তর বছর আগে, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের ডামাডোলের মাঝে আমেরিকার নিউ ইয়র্কে একটি
ইতালীয় অভিবাসী পরিবারে যে এক দেবশিশুর জন্ম, বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের তাণ্ডবের
কালে নীরবে তাঁর জীবনের যবনিকাপাত। সাত দশকের বেশি সময়ের জীবন তাঁর মহিমান্বিত কর্মগাঁথায়
আলোকিত, এশিয়ার ক্যাথলিক মন্ডলীর একজন মহান মিশনারী ও গণমাধ্যম দিশারী হিসেবে অতুলনীয়।
ফাদার
রবার্ট এস্টোরিনো (ফাদার বব নামে সমধিক পরিচিত) নিউ ইয়র্ক শহরের একটি হাসপাতালে বিগত
২৫ জুন, ২০২০ খ্রিস্টাব্দে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ভিত্তিক শতবর্ষী মিশনারী ধর্মসংঘ মেরীনল সম্প্রদায়ের
যাজক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। ফাদার ববের বোন জ্যানেট এস্টোরিনো তাঁর ভাইয়ের
মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। ৩০ জুন মেরীনল সংঘের প্রধান কার্যালয়ে প্রেরিতগণের রাণী
গির্জায় তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খ্রিস্টযাগ শেষে তাঁকে অন্তিম শয্যায় শায়িত করা হয়।
এর মধ্য দিয়ে এমন এক মহান মিশনারী পুরোহিতের দেহাবসান ঘটল যিনি তাঁর পাঁচ দশকের যাজকীয়
ও মিশনারী জীবনের অধিকাংশ সময় এশিয়া মহাদেশে ক্যাথলিক মন্ডলীর সেবায় কাটিয়েছেন।
ফাদার
বব ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে হংকং-এ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ক্যাথলিক সংবাদ মাধ্যম ইউনিয়ন অব ক্যাথলিক
এশিয়ান নিউজ (UCAN) প্রতিষ্ঠা করেন এবং সুদীর্ঘ ৩০ বছর প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালকের
দায়িত্ব পালন করে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে অবসর নেন।
রবার্ট
এস্টোরিনোর জন্ম নিউ ইয়র্ক শহরে ২৭ মে, ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে। তাঁর পূর্বপুরুষেরা ইতালি
থেকে অভিবাসী হিসেবে আমেরিকাতে এসে বসতি গড়ে তুলেছিলেন। মেরীনল সম্প্রদায়ে সেমিনারিয়ান
হিসেবে প্রবেশের পূর্বে তিনি বিভিন্ন ক্যাথলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করেন। যাজকীয়
প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে মেরীনল যাজক হিসেবে অভিষেক লাভ করেন। শিক্ষা
জীবনে তিনি কৃতী ছাত্র ছিলেন। তিনি নিউ ইয়র্কের ফোরডহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিদ্যায়
এবং কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
এশীয়
মন্ডলীতে মিশনারী
ফাদার
বব ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে হংকং-এ মিশনারী হিসেবে কাজ করতে আসেন। প্রাথমিকভাবে তিনি একদল
মেরীনল যাজকের সাথে চাইনিজ ভাষা শেখেন এবং পরবর্তীতে তাদের সাথে চীনের মূল ভূখণ্ড হতে
হংকং-এ পালিয়ে আসা শরণার্থী এবং তাদের সন্তান যুবক-যুবতীদের মধ্যে কাজ করেন।
১৯৭৪
খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি হংকং ধর্মপ্রদেশের সামাজিক যোগাযোগ প্রেরণ কাজে মনোনিবেশ করেন
এবং পরবর্তীতে সেটা এশীয় ক্যাথলিক মন্ডলীর জন্য তাঁর আজীবনের পালকীয় ও মিশনারী সেবাকাজে
পরিণত হয়। তিনি হংকং ধর্মপ্রদেশের সামাজিক যোগাযোগ কমিশন ও সেটার কার্যালয় স্থাপনে
উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখেন এবং কয়েক বছর তিনি সেটার সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৫-১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি হংকং-এর চাইনিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা ও সংবাদধর্মী
লেখার বিষয়ে শিক্ষকতা করেন।
ফাদার
বব বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্যাথলিক গণমাধ্যম সংস্থার এশীয় শাখার নানা পদে দায়িত্ব পালন
করেন যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ইস্ট এশিয়া ক্যাথলিক প্রেস এসোসিয়েশন (EACPA)। সে সময়
তিনি উপলব্ধি করেন এশিয়ার ক্যাথলিক মণ্ডলীগুলোর মাঝে পারস্পরিক যোগাযোগ ও তথ্য আদান
প্রদানে অনেক ঘাটতি রয়েছে। ১৯৭০-৮০’র দশকে দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভার আলোকে এশীয় ক্যাথলিক
মন্ডলীতে এক নবজাগরণ চলছিল এবং দেশে দেশে জাতীয় ও আঞ্চলিক বিশপীয় কনফারেন্স এবং বিভিন্ন
আন্তর্জাতিক সংগঠন গড়ে উঠছিল। কিন্তু সে অনুপাতে পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন ও বজায় রাখার
ভাল কোন গণমাধ্যম ছিল না।
মূলত
এশীয় ক্যাথলিক মণ্ডলীগুলোর মাঝে পারস্পরিক যোগাযোগ ও তথ্য আদান প্রদান এবং ইউরোপ, আমেরিকা
তথা বিশ্ব মন্ডলীর কাছে এশীয় ক্যাথলিক মণ্ডলীর কার্যক্রম, সাফল্য, চ্যালেঞ্জ, সুখ-দুঃখের
কথা তুলে ধরতেই ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে হংকং-এ তিনি ইউকানের প্রতিষ্ঠা করেন। কালক্রমে তাঁর
অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ১৪টি সংবাদ ব্যুরো স্থাপিত হয়, যা ২২টির মত
দেশকে ইউকানের কভারজে নিয়ে আসে । ইটালির রাজধানী রোমেও ইউকান স্থায়ী সংবাদদাতা নিয়োগ
দেয়। কালক্রমে ইউকান শুধু এশিয়া নয় বরং গোটা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ও প্রভাবশালী ক্যাথলিক
সংবাদ মাধ্যম হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। পত্র-পত্রিকা, জার্নাল, রেডিও, টিভিসহ পৃথিবীর
বিভিন্ন দেশের খ্রিস্টান গণমাধ্যম ইউকানের সংবাদ ব্যাপক হারে ব্যবহার করতে শুরু করে।
প্রথমে মূলত ইংরেজি ভাষায় যাত্রা শুরু করলেও ইউকান পরবর্তীতে চাইনিজ, কোরিয়ান, ভিয়েতনামী,
ইন্দোনেশীয় ও ফিলিপিনো ভাষায় অনুবাদিত সংবাদ পরিবেশন করতে থাকে।
এশীয়
মণ্ডলীর পালকীয় সেবার লক্ষেই ক্যাথলিক সাংবাদিকতাকে তিনি তাঁর মিশনারী জীবনের কেন্দ্রবিন্দু
করেছিলেন। সে কারণে (UCAN)-এর মিশন হিসেবে তিনি বেছে নেন “এশিয়ার ক্যাথলিক মন্ডলীর
সম্পর্কে এবং ক্যাথলিক মন্ডলীর জন্য সংবাদ।“ ইউকান মূলত অনলাইন মিডিয়া হলেও ফাদার বব
তাঁর সময়কালে “এশিয়া ফোকাস” (Asia Focus) নামে একটি সাপ্তাহিক সংবাদ বুলেটিন ছাপানোর
ব্যবস্থা করেন, যা চাঁদার বিনিময়ে এয়ার মেইলের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাঠানো
হতো।
একজন
সুদক্ষ সাংবাদিক, গণমাধ্যম অগ্রদূত ও শিক্ষক হিসেবে তিনি বছরের পর বছর এশিয়ার নানা
দেশ চষে বেরিয়েছেন। অজস্র প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা পরিচালনা করে বহু ক্যাথলিক সাংবাদিককে
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মাধ্যমে কাজ করার দক্ষতা অর্জনে অসামান্য সহায়তা করেছেন। তাঁর
শিক্ষা পেয়ে পরবর্তীকালে অনেকে শুধুমাত্র ক্যাথলিক সংবাদ মাধ্যম নয় বিভিন্ন মূলধারার
গণমাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়তে ও শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।
থাইল্যান্ডের
শিক্ষাবিদ ও ইউকান বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান চাইনারং মন্থিয়েনভিচিএঞ্চাই ফাদার ববকে
“তাঁর সময়ের একজন গণমাধ্যম অগ্রদূত” হিসেবে আখ্যা দেন যিনি তাঁর “অসামান্য নেতৃত্ব
ও অনুপ্রেরণা দিয়ে এক দ্রুত পরিবর্তনশীল সময়ে বিশেষ অবদান রেখেছেন।“
তিনি
বলেন, “তাঁর সময়ে যারা অধীনে কাজ করেছে তারা মূলত তাঁর মতই সাংবাদিকতাকে একটি প্রেরণ
কাজ হিসেবে গ্রহণ করে সেটা করত, আর্থিক বা পেশাদারি অর্জন তাদের কাছে মুখ্য ছিল না।“
আমেরিকান
ক্যাথলিক গণমাধ্যম ক্যাথলিক নিউজ সার্ভিসের সম্পাদক বারবারা ফ্রেজ বলেন, “ইউকান
শুরুর পর প্রথমদিকে ফাদার বব যখন আমাদের অফিসে আসতেন, তিনি বলতেন ইউকানের সংবাদ পুরনো
হলেও গুরুত্বপূর্ণ কারণ এশীয়রা এগুলো লিখে এবং তা এশীয় মন্ডলীর কথা বলে যা কেউ বলছে
না বা লিখছে না।“
স্বনামধন্য
ভারতীয় সাংবাদিক এ. জে. ফিলিপ বলেন, “বব এস্টোরিনো ছিলেন একজন দূরদর্শী, যিনি সাংবাদিকতাকে
তাঁর প্রেরণকাজ (Mission) হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। তাঁর কাছে বাণীই ছিল ঈশ্বর।“
জীবদ্দশায়
ফাদার বব তাঁর অসামান্য কাজের স্বীকৃতি পেয়েছেন। ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
ক্যাথলিক প্রেস এসোসিয়েশন তাঁকে “বিশপ জন ইংল্যান্ড” পুরস্কারে ভূষিত করে এবং জানায়
যে এ পুরস্কার “ক্যাথলিক প্রেসকে ব্যবহার করে ধর্মীয় ও ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সুরক্ষার
এবং মুক্ত সমাজ গঠনের অবিরাম প্রয়াসের স্বীকৃতি।“
এছাড়াও ফাদার বব এশীয় ক্যাথলিক বিশপ সম্মিলনী (FABC)-এর একজন উপদেষ্টা এবং ভাটিকানের পোপীয় সামাজিক যোগাযোগ পরিষদের (PCSC)-এর একজন সদস্য হিসেবে অনেক বছর দায়িত্ব পালন করেন।
ফাদার
রবার্ট এস্টোরিনো ইউকান বাংলাদেশ সংবাদদাতা প্রশিক্ষণ শেষে ঢাকায় কারিতাস কেন্দ্রীয়
অফিস চত্বরে, ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ |
ফাদার
ববের হাতে গড়া সাংবাদিক ও সাবেক সহকর্মীরা তাঁকে শুধুমাত্র একজন অসামান্য গুরু বা শিক্ষক
হিসেবেই নয়, পাশাপাশি তাঁকে একজন অসাধারণ মানুষ হিসেবেও মনে রেখেছেন। তাদের অনেকের
কাছে তিনি ছিলেন সাহসী সাংবাদিক, সহজ-সরল জীবন, সাধু চরিত্র এবং স্নেহশীল পিতার ন্যায়।
ইউকান
ইন্ডিয়ার সাবেক ব্যুরো প্রধান জোসেফ কাভি বলেন, “তিনি আমার সাংবাদিক জীবনের গুরু।
দীর্ঘ ২৫ বছর আমি তাঁর সাথে কাজ করেছি। তিনি ছিলেন একজন চীন বিশেষজ্ঞ এবং এশিয়ার একজন
সত্যিকার মিশনারী। তিনি এশিয়ার মানুষ ও সংস্কৃতিকে অনেক ভালবাসতেন। তিনি আমাদের উৎসাহ
দিতেন যেন আমরা ছোট বা বড় সব ঘটনার মাঝে ঈশ্বরকে খুঁজে পাই।“
সিঙ্গাপুর
নিবাসী ও ইউকানের সাবেক উপ-সম্পাদক খ্রিস্টফার খো লিখেছেন, “ইউকানকে ফাদার বব একটি
বৃহৎ পরিবার হিসেবে দেখতেন এবং তাঁর কাছে কর্মীরা ছিল পরিবারের একেকজন সদস্য।“
দেশে
বিদেশে তাঁর দীক্ষা পাওয়া অনেকে তাঁর অসাধারণ সব শিক্ষা ও উক্তির কথা আজ মনে রেখেছে।
এর মধ্যে অন্যতমঃ Show, Don’t Tell (বোলো না, দেখতে দাও). তিনি প্রায়ই বলতেনঃ
When we change the way we look at things, the things we look at change (যখন আমরা
কন কিছুর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাই, তখন গোটা বিষয়টাই বদলে যায়)।
ফাদার
বব ক্যাথলিক মন্ডলীর ইতিহাসে যুগান্তকারী পরিবর্তনের প্রতিভূ দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভার
শিক্ষায় আলোকিত মনিষী ছিলেন। তাঁর সব কাজ, আচরণ ও শিক্ষায় তাঁর সুস্পষ্ট ছাপ ছিল। তিনি
এশিয়াতে ক্যাথলিক মণ্ডলীর আন্তঃধর্মীয় সংলাপের অনেক প্রশংসা করতেন এবং পরধর্মমতের প্রতি
শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে একটি সেমিনারে তিনি বলেছিলেন, “এশিয়াতে খ্রিস্টানরা
সংখ্যালঘু, কিন্তু তারা ভালভাবে টিকে আছে। এর কারণ হল তারা অন্য ধর্মের অনুসারীদের
আস্থা অর্জন করেছে এবং তারা তাদের সহায়তা করেছে। এটাই হল আন্তঃধর্মীয় সংলাপের সৌন্দর্য।“
ইউকানের
ব্যুরো প্রতিষ্ঠা করতে ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে ফাদার বাংলাদেশে আসেন। সে বছর ২২-২৬ জুলাই
ঢাকার কারিতাস মিলনায়তনে তিনি দেশের পাঁচটি ধর্ম প্রদেশ হতে আগত ১৪ জন ভাবী ইউকান সংবাদদাতাকে
তিনি ইউকান কী, কেন এবং কিভাবে ইউকানের জন্য সংবাদ সংগ্রহ করতে ও লিখতে হবে সে বিষয়ে
প্রশিক্ষণ দেন। বর্তমানে কানাডা প্রবাসী বিশিষ্ট লেখক ও সাপ্তাহিক প্রতিবেশীর প্রাক্তন
সম্পাদক জেরোম ডি’কস্তা ছিলেন ইউকানের প্রথম বাংলাদেশ প্রতিনিধি এবং ব্যুরো প্রধান।
তিনি এই কর্মশালা আয়োজনের ব্যবস্থা করেন।
সে
প্রশিক্ষণে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশে ইউকানের সংবাদদাতা হিসেবে
কাজ করেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন প্রখ্যাত হলিক্রস মিশনারী ফাদার রিচার্ড ডব্লিউ টিম এবং কারিতাস বাংলাদেশের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ডঃ বেনেডিক্ট
আলো ডি’ রোজারিও।
বর্তমানে
কারিতাস এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ডঃ আলো ডি’রোজারিও ফাদার ববের মহাপ্রয়াণে বিশেষ শোক প্রকাশ
এবং তাঁর অসাধারণ অবদানের কথা স্মরণ করেছেন।
তিনি
এক বার্তায় বলেনঃ “ফাদার রবার্ট এস্টোরিনোর হাতে আমাদের সাংবাদিকতা শিক্ষার হাতেখড়ি।
তিনি আমাদের শিখিয়েছিলেন কিভাবে সহজ, সংক্ষিপ্ত ও সরাসরিভাবে রিপোর্ট লিখতে হয়। এশিয়া
মহাদেশ এবং তার বাইরেও বহু সাংবাদিকের কাছে ফাদার রবার্ট এস্টোরিনো অনুপ্রেরণার উৎস
হয়ে থাকবেন।“
এরপরেও
ফাদার বব কয়েকবার বাংলাদেশে আসেন এবং সর্বশেষ আসেন ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে। তিনি ১১-১৫ ফেব্রুয়ারি
ইউকান বাংলাদেশের ১৬জন সংবাদদাতাকে প্রশিক্ষণ দেন ঢাকার কারিতাস সিডিআই মিলনায়তনে।
সে সময় অমিয় জেমস এসেনসন ( বর্তমানে কানাডা প্রবাসী) ছিলেন ইউকানের ব্যুরো প্রধান।
বাংলাদেশে ক্যাথলিক মন্ডলীর প্রতি তাঁর মূল্যায়ন ছিল খুবই ইতিবাচক। তাঁর মতে, বাংলাদেশ
ক্যাথলিক মন্ডলী খুব ক্ষুদ্র হলেও দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভার চেতনাকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে,
স্থানীয় মন্ডলী শক্ত ভিত্তির উপর স্থাপিত এবং উপাসনার সংস্কৃত্বায়ন অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
বাস্তবিক
অর্থেই ফাদার রবার্ট এস্টোরিনো একজন মহান মিশনারী ছিলেন। এশিয়াতে ক্যাথলিক মন্ডলীর
যোগাযোগ ও মিডিয়া ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অসামান্য, অভূতপূর্ব ও তা নিশ্চিতভাবে চিরস্মরণীয়
হয়ে থাকবে। তাঁর মিশনারী জীবন ও সেবাকাজ যুগ যুগ ধরে অনেকের জন্য আদর্শ ও অনুপ্রেরণার
উৎস হিসেবে বিবেচিত হবে।।
No comments:
Post a Comment