Showing posts with label Jesus Christ. Show all posts
Showing posts with label Jesus Christ. Show all posts

Jan 7, 2024

এক মহাজীবন ও পরিবর্তন ভাবনা

 

Photo: The Brilliance

আজ হতে দুই হাজারের বছরেরও বেশি সময় পূর্বে এক হিম শীতল রাতে জীর্ণ একটি গোশালায় এক মহামানবের জন্ম হয়েছিল। ঈশ্বরের মনোনীত ইহুদী (ইস্রায়েল) জাতিকে মুক্তি দিতে মারীয়া ও যোসেফের ঘরে দেবশিশু হিসেবে তাঁর আবির্ভাব। তাঁর নিজ জাতির মানুষ তাঁকে ত্রাণকর্তা হিসেবে মেনে নেয় নি এবং পরবর্তীতে ক্রুশে ঝুঁলিয়ে তাকে হত্যা পর্যন্ত করেছে। কিন্তু যীশুর প্রবর্তিত খ্রিস্ট ধর্মকে বিশ্বের প্রায় ২৪০ কোটির মতো মানুষ পালন ও হৃদয়ে ধারণ করে চলেছে। নানা তথ্য ও উপাত্ত ঘেঁটে বেশ কয়েক বছর আগে গবেষকেরা বের করেছেন যে “যীশু নামটি মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং সর্বাধিক ব্যবহৃত।” 

খ্রিস্টানগণ যীশুকে নানা উপাধিতে ভূষিত করেন এবং সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করেন, যেমন, খ্রিস্ট (মুক্তিদাতা), মশীহ (ত্রাণকর্তা) এবং ইম্মানুয়েল (ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন) প্রভৃতি। দুই সহস্রাব্দ পূর্বে তাঁর অবিস্মরণীয় জন্ম এবং তাঁর মহাজীবনকে উদ্যাপন করতে প্রতি বছর তাঁর অনুসারী কোটি কোটি ভক্ত ডিসেম্বরের পঁচিশ তারিখ ক্রিসমাস বা বড়দিন পালন করে থাকেন। 

বাইবেল বিশেষজ্ঞরা বলেন মহামানব যীশু মাত্র তেত্রিশ বছর বেঁচে ছিলেন। এর মধ্যে তার বাল্যকালের কিছু সময় এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর আগে তাঁর তিন বছরের প্রকাশ্য জীবন ছাড়া তেমন কিছু জানা যায় না। অথচ এ সংক্ষিপ্ত জীবনে তিনি এমন অসামান্য কীর্তি সাধন ও জীবন যাপন করেছেন এবং বাণী রেখেছেন তা যীশুকে পৃথিবীর হাজার বছরের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম মহাপুরুষের আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। ঈশ্বরপুত্র হয়েও তাঁর চরম দীনবেশে জন্ম যেমন এক বিস্ময়কর ও অভূতপূর্ব ঘটনা, তেমনি তাঁর গোটা মানব জীবনই এক অমূল্য শিক্ষা ও অবিস্মরণীয় ইতিহাস। যীশুর জন্ম না হলে পৃথিবীর ইতিহাস ভিন্ন হতো এবং অপূর্ণ রয়ে যেতো। প্রাচ্যদেশে জন্ম হলেও পাশ্চাত্যে খ্রিস্ট ধর্মের প্রচার ও প্রসার সভ্যতার ইতিহাসে অভাবনীয় অবদান রেখেছে এবং কালক্রমে তার সুফল গোটা বিশ্ব‌কে আলোকিত করেছে।

যীশু: পরিবর্তনের পথিকৃৎ

জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি যীশুর জীবন পরিবর্তনের বার্তা রেখে গেছে -- যেভাবে কেউ আগে ভাবে নি, যে কথা কখনো বলা হয় নি এবং যে কাজ আগে কেউ করে নি -- সবটাই তিনি করে দেখিয়েছেন তাঁর এক ক্ষুদ্র মহাজীবনে। সমাজের তথাকথিত নেতা ফরিশীদের তিনি তিরস্কার করেছেন তাদের ভন্ডামি এবং লোক দেখানো কথা ও কাজের জন্য। করগ্রাহকের মতো সমাজে ঘৃণিত মানুষকে তিনি কাছে টেনেছেন, ব্যভিচারী নারীর মতো অত্যাচারিত এবং অসহায় বিধবার মতো অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠা করেছেন।

যে পরিবর্তনের বাণী ও শিক্ষা যীশু রেখে গেছেন পরবর্তীতে তাঁর শিষ্যগণ এবং প্রথম যুগের খ্রিস্টানগণ তা বিশ্বব‌্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছেন। সারা বিশ্ব জুড়ে আজ শিক্ষা, চিকিৎসা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, মানবিক সহায়তা, মানবাধিকার এবং সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার যে প্রয়াস তার মূলসূত্র মহামানব যীশুর জীবন ও শিক্ষা।

প্রতি বছর বড়দিন আসে এবং খ্রিস্টানগণ ঘটা করে তা পালন করে। কিন্তু ভাববার বিষয় হলো এ উৎসব কি শুধুমাত্র আনন্দ আয়োজন এবং বাহ্যিকতায় সীমাবদ্ধ? প্রতিটি বড়দিনের বার্তা হওয়া উচিৎ জীবনের পরিবর্তন - ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সুষম উন্নয়ন এবং সাম্যভিত্তিক বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে। 

বৃহৎ পরিসরে না হোক ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে যীশুর আদর্শ ও শিক্ষা মেনে জীবন উন্নয়নে পরিবর্তনের পথে শামিল হওয়া আমাদের অবশ্য কর্তব্য। অনেক বড় কিছু করতে না পারি ছোট ছোট কাজ অনেক বেশি উৎসাহ ও ভালোবাসা নিয়ে আমরা করার চেষ্টা করতেই পারি। জীবনকে পরিবর্তনের জন্য কিছু আসক্তি আমরা যদি ছাড়তে পারি এবং সুঅভ্যাস গড়ে তুলি, তবে তা আমাদের জীবন এবং আশেপাশের অনেকের জীবনকে সুন্দর করতে সাহায্য করবে।

সুখী হতে চাইলো তুলনা করো না

পিটার পার্ক মাধ্যমিক স্কুলের পর আর পড়াশোনা করতে পারে নি। তার বাবা মোটর মেকানিক বাবা জোসেফ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় যখন তার বয়স মাত্র দশ বছর। তার মা ক্যাথেরিন এক প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন এবং তিনি অনেক কষ্টে পিটার ও ছোট ছেলে পলকে বড় করেন। কিন্তু ব্রেন ক্যান্সারে ক্যাথেরিন মারা যান এবং তাদের দুই ভাই তাদের আন্টি (মায়ের বোন) ক্রিস্টেনের পরিবারে থাকতে শুরু করে। অল্প বয়সে পিতা-মাতা হারানো এবং আশ্রিত জীবন পিটারের মনে গভীর দাগ কাটে। সে যখন দেখতো তার কাজিনরা বাবা-মার সাথে আনন্দ করছে এবং সুন্দর সময় কাটাচ্ছে, তার তখন খুব রাগ হতো। খেলার সময় সে ইচ্ছে করে তার কাজিনদের আঘাত করার চেষ্টা করতো। তার পড়াশোনায় মন বসতো না, শুধু বাইরে বেড়াতে ইচ্ছে করতো। 

স্কুল ছাড়ার পর পিটার একটি বারে চাকুরি নেয়, কিন্তু খুব দ্রুত মদের নেশা ধরে যাওয়ায় তার চাকরি চলে যায়। পরে সে তার বাবার মতো এক মোটর গ্যারেজে কাজ শুরু করে, যদিও নেশা সে ছাড়তে পারে নি। একদিন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় একটি গাড়ি তাকে ধাক্কা দেয় এবং আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়। হাসপাতালে এক যুবতী নার্স তাকে অনেক যত্ন করে, তাকে পিটারের বেশ ভালো লেগে যায়। কথা প্রসঙ্গে রেবেকাকে সে তার জীবনের সব কিছু খুলে বলে এবং কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। পিটারের অসহায়ত্ব এবং অকপট স্বীকারোক্তি রেবেকাকে স্পর্শ করে। সে তাকে সঙ্গ দিতে এবং সাহায্য করতে রাজি হয়। সুস্থ হওয়ার পর পিটার এবং রেবেকা এক পার্কে দেখা করে এবং তাদের ভালো লাগাকে ভালোবাসায় রুপ দিতে মনস্থ করে। রেবেকা পিটারকে তার দু:খের অতীত ভুলে যেতে এবং সব কিছু নতুন করে আরম্ভ করতে অনুরোধ করে। “প্লিজ ফরগেট ইউর ব্যাড ডেজ। লেট আস স্টার্ট অল অভার এগেইন। স্টপ কমপেয়ারিং ইউরসেল্ফ উইদ আদার্স প্লিজ!” রেবেকার কথা পিটার মন দিয়ে শোনে। সে থেকে তার নতুন জীবনের শুরু। পনের বছর পরে পিটার আজ নিজে এক মোটর গ্যারেজের মালিক এবং রেবেকা তার হাসপাতালের মেট্রন। স্কুল পড়ুয়া দুই ছেলে ও মেয়ে নিয়ে তাদের সুখের সংসার।

পিটারের মতো অন্যের কথা, কাজ, জীবন, সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়ে নিজের সাথে তুলনা মানুষের মজ্জাগত স্বভাব, যা সুফলের চেয়ে কুফল বয়ে আনে বেশি। তুলনা করার অভ্যাস জীবন নিয়ে মানুষকে অসন্তুষ্ঠ এবং নেতিবাচক করে তোলে। সুপ্ত পরশ্রীকাতরতা বা ঈর্ষা থেকে অনেক মানুষ অন্যকে টপকে যাওয়ার অহেতুক চেষ্টা করে, নিজের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে অর্জনের জন্য নিজের উপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে। কখনো কখনো অন্যজনকে অকারণে প্রতিপক্ষ বানিয়ে তার ক্ষতি করার নানা অশুভ চেষ্টা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সে নিজে, কারণ সুখ, সাফল্য ও শান্তি নাগালের বাইরে থেকে যায়। নিজের সাথে লড়াই করতে করতে এক সময় শারীরিক এবং মানসিক অবসাদ থেকে কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়ে, এবং কখনো কখনো আকস্মিক মৃত্যু জীবনের ইতি টেনে দেয়। 

তুলনা করার নেশা থেকে মুক্তি অভ্যাসের ব্যাপার। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে জেগে আরেকটি নতুন দিন এবং নতুন সুযোগের জন্য যদি ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞ হতে পারি এবং রাতে শয্যা গ্রহণের আগে যদি জীবনে যা পেয়েছি এবং যা হয়েছি তার জন্য আনন্দিত হতে শিখি, তবে এক সময় তুলনার আসক্তি জীবন থেকে বিদায় নিতে বাধ্য।

সততা, পরিশ্রম ও উদ্যমতা

রবিন রোজারিও এবং রোবেন গমেজ একটি আইটি ফার্মে জুনিয়র এ্যাপ ডেভেলপার হিসেবে এক মাসের ব্যবধানে জয়েন করেছে। দুজনেই আইসিটিতে উচ্চতর ডিগ্রিপ্রাপ্ত, সৎ এবং শৃংখলাপরায়ণ। ভালো মানুষ এবং কর্মী হিসেবে অফিসে দুজনেরই সুনাম রয়েছে। দুজনেরই ক্যারিয়ারে অনেকদূর যাওয়ার আকাঙ্খা আছে। 

কিন্তু দুজনের মধ্যে একটা বিষয়ে সুষ্পষ্ট পার্থক্যও আছে। রোবেন রুটিনমাফিক কাজ করে, সকাল ৯টা থেকে ৫টা এবং অফিস টাইমের বাইরে সে কোন কাজ করে না। ছুটির দিনে জরুরী কোন কাজে ডাক পড়লে সে নানা অজুহাতে এড়িয়ে যায়। অফিস এবং বাসা ছাড়া সে তেমন কোথাও যায় না। কোনভাবে এড়াতে পারলে বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের বাসাতেও সে তেমন যায় না। অবসর সময় সে বই পড়ে এবং টিভি দেখে পার করে দেয়। অন্যদিকে রবিন অফিস টাইমের বাইরে প্রয়োজনে এক দুই ঘন্টাও কাজ করে। ছুটির দিনে কাজে ডাকলে সে খুব কমই না করে। সময় পেলে সে পরিবার নিয়ে আত্মীয় ও বন্ধুদের বাসায় বেড়াতে যায়। শহরে আইটি মেলা ও প্রদর্শনী হলে সময় করে রবিন তাতে যোগ দেয় এবং এক্সপার্টদের কাছ থেকে নানা পরামর্শ নিয়ে থাকে।

পাঁচ বছর শেষে রবিন এখন তার বিভাগের প্রধান। অন্যদিকে রোবেন কোনক্রমে প্রমোশন পেয়ে জুনিয়র থেকে সিনিয়র এ্যাপ ডেভেলপার হয়েছে।

রোবেনের মতো অনেকেই স্বপ্ন দেখে জীবনে বড় হওয়ার বা বড় কিছু করার। কিন্তু সে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে যথাযথ পদক্ষেপ নেয় না বা কাজ করে না। তারা বর্তমানের আরামপ্রদ বা সুবিধাজনক অবস্থান থেকে বের হয়ে আসতে চান না এবং স্বপ্ন পূরণের জন্য সামান্য ঝুঁকি পর্যন্ত নিতে রাজি নয়। এখন সিদ্ধান্ত নেবার পালা আমার ও আপনার -- আমরা কার দলে থাকতে চাই।

হাল ছেড়ো না বন্ধু

অয়ন পিটার রোজারিও’র জন্ম গ্রামের এক গরীব কৃষক পরিবারে। পিতা-মাতার তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড়। অনেক কষ্ট করে পরিবারের সহায়তা এবং টিউশনি করে ঢাকার নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সে ইংরেজি সাহিত্য এবং যোগাযোগ বিদ্যায় দুটি মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছে। একটি নামী বহুজাতিক মিডিয়া ফার্মে জয়েন করে এখন সিনিয়র ম্যানেজার পদে আছে। বছর দুয়েক আগে হঠাৎ করে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মধ্যে পলিসি নিয়ে বেশ বড় ধরণের বিতর্ক ও বিবাদ হয়। পরিচালনা পর্ষদ বিভক্ত হয়ে যায় এবং দুই গ্রুপ ফার্মের দখল নিতে মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ে। বিদ্রোহী গ্রুপ মামলায় হেরে গিয়ে নতুন আরেকটি ফার্ম চালু করে এবং বেশি বেতনের লোভ দেখিয়ে পুরানো ফার্মের অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে নিয়োগ করে। মূল ফার্মটি বিবাদ ও মামলার জেরে অনেক ক্লায়েন্ট হারিয়ে ফেলে এবং বিরাট আর্থিক সংকটে পড়ে যায়। আগের মতো বেতন দিতে না পেরে অনেক কর্মীকে ছাঁটাই করতে বাধ্য হয় এবং যারা তারপরও রয়ে যায় তাদের বেতন হ্রাস করা হয়। 

তখন অয়নের বিয়ের তিন বছর এবং ছোট ভাইয়ের বিয়ের কথা চলছে। পুরো সংসারের দায়িত্ব তার উপর। তার উপর বিয়ের সময় যে পাঁচ লক্ষ টাকা লোন করেছিলো, সেটাও প্রায় অর্ধেক বাকি। ফার্মের এহেন দশায় তার মাথায় বজ্রপাতের মতো আঘাত হানে। সে দিশেহারা হয়ে পড়ে এবং এ অবস্থায় তার কী করা উচিত তা ভেবে দুশ্চিন্তায় তার রাতের ঘুম এক প্রকার হারাম হয়ে যায়। একবার সে ভাবে চাকরিটা ছেড়ে দেবে এবং নতুন প্রতিষ্ঠানে যোগ দেবে। পরে আবার ভাবে যে প্রতিষ্ঠান থেকে সে এত কিছু শিখেছে এবং যে প্রতিষ্ঠান নানা বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়িয়েছে, এখন সুযোগ বুঝে বিপদের সময় স্বার্থপরের মতো সরে পড়বে? অবশেষে আর্থিক অনটনকে মাথা পেতে নিয়ে বিবেকের তাড়নায় অয়ন পুরোনো প্রতিষ্ঠানেই রয়ে যায়। সংকটের মাঝেও হাল ছেড়ে না দিয়ে নিজের সর্বোচ্চ মেধা ব্যবহার করে কাজ চালিয়ে যেতে থাকে।

পরবর্তী তিন বছরে ফার্মটি আর্থিক সংকট অনেকাংশে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়, অনেক পুরোনো ক্লায়েন্টও ফিরে পায়। আর্থিক অবস্থা উন্নতির পর কর্মচারীদের বেতন বাড়তে থাকে এবং প্রমোশন হয়। অয়ন ম্যানেজারের পদ থেকে সিনিয়র ম্যানেজার পদে নিয়োগ পায়। সংসারের টানাপোড়েনও বহুলাংশে কেটে যায়। এদিকে যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে বিদ্রোহী প্রতিষ্ঠানটি এক প্রকার বন্ধ হবার উপক্রম হয় এবং বেশির ভাগ কর্মচারী চাকুরি ছেড়ে চলে যায়।

মানব জীবনে সুখ-দু:খ এবং হাসি-কান্না একটি মুদ্রার এপিঠ ওপিঠের মতো। মণীষীরা বলেন যে, “পৃথিবীতে নিরবচ্ছিন্ন সুখ বা দু:খ বলে কিছু নেই।” সুখের পরে দু:খ আসে, কান্নার পরে হাসি -- জগতের এটাই নিয়ম। কঠিন সময়ে মনে বেদনা জাগে, হতাশা গ্রাস করে এবং জীবনকে অর্থহীন মনে হয়। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, “দু:খের মতো পরশ পাথর আর নেই।” সোনা যেমন আগুনে পুঁড়ে নিখাঁদ হয়, তেমনি দু:খের নদী পেরিয়ে সুখের দেখা পাওয়া যায়। আর সংকটে বিপন্ন হলেও নিরাশ হওয়া চলবে না এবং কোনভাবে হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না। 

জীবনে চলতে গিয়ে সবাই কম-বেশি হোঁচট খায় এবং ব্যথা পায়। কিন্তু তারাই জীবনে উন্নতি করে যারা ধুলো ঝেড়ে আবার উঠে দাঁড়ায় এবং পথ চলতে শুরু করে। একথা আমরা প্রায়ই শুনি, “এগিয়ে চলার নামই জীবন, থেমে যাওয়া মানে মৃত্যু।” কালভেরীর পথে ভারী ক্রুশ বয়ে আহত এবং রক্তাক্ত যীশু যদি পড়ে গিয়ে বারবার উঠে না দাঁড়াতেন, ক্রুশে কঠিনতম মৃত্যু না বরণ করতেন এবং মৃত্যু বিজয় না করতেন তাহলে তো খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তনই হতো না। 

আমরা যারা যীশুকে গুরু এবং মুক্তিদাতা হিসেবে মান্য করি, তাদের সবার জীবনের আশা-ভরসা, আদর্শ এবং জীবন গঠন, পরিবর্তন এবং উন্নয়নের প্রতিভূ তিনি। কবিগুরু রবি ঠাকুরের গান এবং কবিতা যেমন মানুষের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের সাথে মিলে যায়, তেমনি জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি মহামানব যীশুর জীবন, বাণী এবং আদর্শ হয়ে উঠুক আমাদের জীবন পথের অমূল্য পাথেয়।।

Jan 25, 2018

ন্যায্যতা, মানবাধিকার ও শান্তি


Justice, Human Rights and Peace. Photo: Justice and Peace Foundation, Archdiocese of Kingston, Canada

সমাজে বসবাসকারী সকল মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের সাথে ন্যায্যতা, মানবাধিকার ও শান্তি নিবিড়ভাবে জড়িত। সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যদিও সবাই সমানভাবে জন্মগ্রহণ করে না, তথাপি মানব মর্যাদার দিক থেকে সকলেই সমান অধিকার লাভের যোগ্য। “যা সিজারের তা সিজারকেই দাও! আর যা ঈশ্বরের, তা ঈশ্বরকেই দাও (মথি ২২:২১)।” মানবপ্রেমী যীশুখ্রীষ্টের এই অসাধারণ বাণীর মাঝেই ন্যায্যতা ও মানবাধিকার সংক্রান্ত সকল প্রশ্নের উত্তর নিহিত আছে। ন্যায্যতা মানে হলো ব্যক্তি মানুষের মর্যাদা দেওয়া এবং তার মানবাধিকার মৌলিক অধিকারের প্রতি ন্যায়ানুগ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা। অর্থাৎ সহজ কথায়, যার যা প্রাপ্য তা তাকে প্রদান করাই হচ্ছে ন্যায্যতা।

দক্ষিণ এশিয়ায় ভোটের রাজনীতি এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়

Bangladeshi Christians who account for less than half percent of some 165 million inhabitants in the country pray during an Easter Mass in D...