Jun 14, 2018

ব্রাজিলঃ নান্দনিক ফুটবলের ধারক ও বাহক


২০১৮ রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বিশ্বের কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমীর মত বাংলাদেশের জনগণও ক্রমশ ফুটবল জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। হাটে, মাঠে, ঘাটে এবং অধুনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রিয় দলের সমর্থনে প্রচার, তর্ক এবং বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়ে গেছে।

আমি কখনো ভাল ক্রীড়াবিদ বা ফুটবলার ছিলাম না। তবে সর্বদা নিজেকে ফুটবল অন্তঃপ্রাণ ও ক্রীড়ামোদী হিসেবে মনে করি। আমার ফুটবল অনুরাগ শুরু ১৯৯৪ ইতালি বিশ্বকাপ থেকে। ব্রাজিলীয় তারকা রোমারিও যে বিশ্বকাপে দ্যুতি ছড়িয়েছিলেন এবং ২৪ বছরের প্রতীক্ষা শেষে ব্রাজিলকে ৪র্থ বারের মত বিশ্বসেরা ফুটবল টিম হিসেবে শিরোপাধারী করতে সক্ষম হন।

আমি তখন মাত্র ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র। সেই সময় থেকে ব্রাজিল ফুটবল দলের একনিষ্ঠ ভক্ত বনে গেলাম, যদিও ফুটবল ইতিহাসের এ শ্রেষ্ঠ দলটির সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না। যখন বড় হলাম ধীরে ধীরে ব্রাজিল ও বিশ্ব ফুটবলে দেশটির একচ্ছত্র আধিপত্য সম্পর্কে জানলাম। যতই জানলাম ততই মুগ্ধ হলাম এবং কালক্রমে দলটির প্রতি ভালবাসা ও সমর্থন তুঙ্গে উঠতে থাকল। জীবনে বহু রকমের অনিশ্চয়তার মাঝেও তাই আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব যতদিন বেঁচে আছি ততদিন ব্রাজিল ফুটবল দলকে ভালবাসা ও সমর্থন জানিয়ে যাব। আমি অন্ধ ভক্ত নই, সব জেনে ও বুঝেই আজীবনের জন্য ব্রাজিল ভক্ত হয়েছি।

ফুটবলের মহাতারকা পেলে ১৯৭০ মেক্সিকো বিশ্বকাপ জয়ের পর ফুটবলকে "জোগো বনিতো" বা "নান্দনিক ক্রীড়া" (The Beautiful Game) হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। ব্রাজিল ফুটবল দল ও জনগণ সর্বদাই সে নান্দনিক ক্রীড়ার পূজা করে এসেছে। মাঝখানে কিছু সময় রক্ষণাত্মক ফুটবল ও ছন্দপতন ঘটলেও ব্রাজিল পুনরায় চিরায়ত নান্দনিক শৈলী নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। এবারের বিশ্বকাপে তাই ব্রাজিল অন্যতম হট ফেভারিট, একথা ফুটবল বিশ্লেষকরাই জোরে শোরে বলছেন। ছন্দময় ব্রাজিল যে কোন ফুটবল টিমের জন্য ভয়ংকর সুন্দর হিসেবে আবির্ভূত হতে সক্ষম তা যেকোনো ফুটবলপ্রেমীই স্বীকার করতে বাধ্য। শুধু লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে থেকে সবার আগে রাশিয়া ২০১৮ বিশ্বকাপের টিকিট কেটেছে বলেই নয়, বরং এ বিশ্বকাপে সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল নিয়ে গেছে ব্রাজিল। ব্রাজিল দলের রিজার্ভ বেঞ্চের খেলোয়াড়দের পেলেও বিশ্বের যেকোন দেশ লুফে নেবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।


আটলান্টিক মহাসাগরের পাড়ে বিশাল আমাজন মহাবন ও খরস্রোতা আমাজন নদীর অববাহিকায় অবস্থিত দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের সর্ববৃহৎ দেশ ব্রাজিল। আয়তনে ব্রাজিল আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ বড়। কিন্তু দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ২০ কোটির কিছু বেশি। তার প্রধান কারণ দেশটির বিরাট একটি অংশ মানুষের বসবাসের জন্য অনুপযোগী, মূলত ভৌগলিক কারণে। ১৫০০ খ্রিস্টাব্দে দেশটি পর্তুগিজ অভিযাত্রী ও নাবিক পেদ্রো আলভারেজ ক্যাবারাল কর্তৃক আবিস্কারের পূর্বে বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অভয়ারন্য ছিল। পর্তুগিজদেও আগমনের পর থেকে ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতা অর্জনের পূর্ব পর্যন্ত পর্তুগিজ সাম্রাজ্যের উপনিবেশ ছিল। ব্রাজিলের সুবিখ্যাত রিও-ডি-জেনেইরো শহর বেশ কিছুকাল গোটা পর্তুগিজ সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ব্রাজিল (পর্তুগিজ "ব্রাসিল") নামটাও পর্তুগিজদের দেয়া। “ব্রাসিল” মানে হলো “জ্বলন্ত আগুনের মতো লাল”। ব্রাজিলে পৌঁছার পর পর্তুগিজরা এর উপকূলবর্তী অঞ্চলে “ব্রাসিল উড” নামের এক ধরণের বিশেষ প্রজাতির গাছের সন্ধান পায়, যে গাছের কাঠ থেকে লাল রঙ প্রস্তুত করা যায়। এ গাছ বেশ দামি বিবেচিত হয় কারণ সে সময় ইউরোপে ক্রমবর্ধমান পোশাক শিল্পে এ রঙ অত্যন্ত মূল্যবান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হতো। “ব্রাসিল” শব্দটি লাতিন “ব্রাসা” থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হয়, যার মানে হলো “জ্বলন্ত আগুন”। পর্তুগিজ ব্রাজিলের রাষ্ট্রভাষা। দেশটির প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ খ্রিস্টান, অধিকাংশ কাথলিক চার্চের অনুসারী।

কিন্তু ব্রাজিলের মানুষের কাছে ফুটবল হলো প্রথম ধর্ম ও প্রথম ভালোবাসা। কথিত আছে, ব্রাজিলবাসী তার ধর্ম ত্যাগ করতে পাওে, প্রেমিক তার প্রেমিকাকে ছেড়ে চলে যেতে পাওে শুধুমাত্র ফুটবলের কারণে। যে ব্যবসায়ী তার ব্যবসায় বিরাট ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে, সে-ও নাকি তার সামান্যতম পুঁজি ফুটবলের স্বার্থে বিসর্জন দিতে পারে। ব্রাজিলের জনগণ ফুটবলকে তাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ করে নিয়েছে। ফুটবলের প্রতি এ প্রগাঢ় ভালোবাসা ও আবেগ ব্রাজিল ফুটবল দলের প্রধান শক্তি ও সে কারণে ব্রাজিল শুধু বিশ্বকাপের ইতিহাসেই নয়, বরং ফুটবলের ইতিহাসেই সবচেয়ে সফল দল হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। ব্রাজিলের সাফল্যের পরিসংখ্যানে ও তাদের ট্রফি কেসে নজর বুলালে ব্যাপারটি আরো বেশি বোধগম্য হবে।

ফিফা বিশ্বকাপ (১৯৩০ হতে সব কটিতে অংশগ্রহণ)
শিরোপাঃ ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৯৪, ২০০২
রানার্স-আপঃ ১৯৫০, ১৯৯৮

কোপা আমেরিকা
শিরোপাঃ ১৯১৯, ১৯২২, ১৯৪৯, ১৯৮৯, ১৯৯৭, ১৯৯৯, ২০০৪, ২০০৭
রানার্স-আপঃ ১৯২১, ১৯২৫, ১৯৩৬, ১৯৪৫, ১৯৪৬, ১৯৫৩, ১৯৫৭, ১৯৫৯, ১৯৮৩, ১৯৯১, ১৯৯৫

কনকাফাফ গোল্ড কাপ
শিরোপাঃ ১৯৯৬ ও ২০০৩

ফিফা অনুর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ
শিরোপাঃ ১৯৮৩, ১৯৮৫, ১৯৯৩, ২০০৩
রানার্স-আপঃ ১৯৯১, ১৯৯৫

ফিফা ফুটসাল বিশ্বকাপ
শিরোপাঃ ১৯৮৯, ১৯৯২, ১৯৯৬, ২০০৮
রানার্স-আপঃ ২০০০

ফিফা কনফেডারেশনস কাপ
শিরোপাঃ ১৯৯৭, ২০০৫, ২০০৯
রানার্স-আপঃ ১৯৯৯

ফিফা অনুর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ
শিরোপাঃ ১৯৯৭, ১৯৯৯, ২০০৩
রানার্স-আপঃ ১৯৯৫, ২০০৫

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ
শিরোপাঃ ২০০০, ২০০৫, ২০০৬
রানার্স-আপঃ ২০০০

ফিফা বিচ সকার বিশ্বকাপ
শিরোপাঃ ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮

অলিম্পিক ফুটবল
শিরোপাঃ ২০১৬
রানার্স-আপঃ ১৯৮৪, ১৯৮৮

১৯৩০ থেকে ২০১৮ সব কয়টি বিশ্বকাপে একমাত্র দল হিসেবে ব্রাজিল অংশ নিতে সক্ষম হয়েছে, য়ে রেকর্ড কোনদিন ভাঙ্গার নয়। শুধু সর্বাধিক ৫টি বিশ্বকাপ ট্রফি জয় নয়, ব্রাজিল এ পর্যন্ত সর্বাধিক ম্যাচে জয় পেয়েছে (৭০)। কালোমানিক পেলে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ৩ টি বিশ্বকাপ জয় করেছেন, যে রেকর্ড আর কোন খেলোয়াড় স্পর্শ করতে পারবে বলে মনে হয় না। ব্রাজিল একমাত্র দল যারা চারটি ভিন্ন মহাদেশে বিশ্বকাপ জয় করেছে এবং লাতিন আমেরিকার একমাত্র দল হিসেবে ইউরোপে (১৯৫৮, সুইডেন) বিশ্বকাপ জিতেছে।

২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে বিশ্বনন্দিত তারকা পেলে, জিকো, রোমারিও, বেবেতো, রোনালদো, রিভালদো, রোনালদিনহো, রবার্তো কার্লোস, কাকা, কাফু ও আদ্রিয়ানোদের যোগ্য উত্তরসুরীরা যে “হেক্সা” (ষষ্ঠ বিশ্বকাপ) জয়ের জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে গেছেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বাছাইপর্বে সর্বাধিক পয়েন্ট ও সর্বাধিক গোল (৪১) প্রমাণ করে তাদের সামর্থ্য। আর কারো যদি তাদের সক্ষমতা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র সন্দেহ থেকে থাকে তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের জয়গুলোর দিকে নজর দিলে তা উবে যাবে--বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে ১-০, বিশ্বকাপ প্রস্তুতি ম্যাচে ক্রোয়েশিয়াকে ২-০ ও অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়। উল্লেখ্য, অস্ট্রিয়া এ বিশ্বকাপে সুযোগ না পেলেও এক প্রস্তুতি ম্যাচে জার্মানিকে ২-১ গোলে হারিয়েছে।

বিশ্বকাপ দুয়ারে কড়া নাড়ছে, আর তাই বিশ্বজুড়ে ও বাংলাদেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি ব্রাজিল ভক্তের ন্যায় আমি চাই ক্যানারী হলুদ জার্সিধারীরা নান্দনিক ফুটবল খেলে শুধু মনই ভরাবে না, বরং ৬ষ্ঠ বারের মতো বিশ্ব জয়ের বন্দরে নোঙ্গর ফেলুক। ১৫ জুলাই মস্কোর ফাইনালে ব্রাজিল শিরোপা জয় করুক, এ প্রত্যাশাই করি। ব্রাজিল যদি ব্রাজিলের মতো খেলে তাদের সেরাটা দিয়ে, তবে তাদেও বিজয় মুকুট জয়ের পথে কেউ বাধা হতে পারবে না। ব্রাজিল ফর হেক্সা! ভিভা ব্রাজিল!

May 16, 2018

প্রসঙ্গ: পান্থনিবাস

জন ভিয়ান্নী উচ্চ মাধ্যমিক সেমিনারীটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ১৪ মে, ২০১৮
সম্প্রতি ফেসবুক মারফত জানতে পারলাম উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে ঢাকার পশ্চিম তেজতুরী বাজার (শুকরের গলি নামেও সমধিক খ্যাত) অবস্থিত জন ভিয়ান্নী উচ্চ মাধ্যমিক সেমিনারীটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ১৪ মে, ২০১৮। বিগত ১৯৯৯/২০০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে সেমিনারীটি ঢাকা ক্যাথলিক আর্চডায়োসিসের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ুয়া ধর্মপ্রদেশীয় যাজকপ্রার্থীদের গঠনগৃহ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। পাঁচতলা এ ভবনটি পান্থনিবাস হিসেবেও পরিচিত। স্থানীয় একজন ক্যাথলিক খ্রিস্টানের দান করা জমিতে এটি নির্মাণ করা হয়।
সেমিনারীটি বন্ধ করে দেবার পক্ষে কর্তৃপক্ষের জোরালো যুক্তি থাকতে পারে। তবে বিষয়টি আমার জন্য ব্যক্তিগত মনোবেদনার কারণ। ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত আমি নিজেও ধর্মপ্রদেশীয় সেমিনারীয়ান ছিলাম, এবং এর মধ্যে ২০০১ এর জুলাই হতে ২০০৩ মে অবধি পান্থনিবাসের বাসিন্দা ছিলাম। এখান থেকে স্বনামধন্য নটর ডেম কলেজে পড়া, ঢাকার শহর চিনতে শেখা ও অগণিত হাসি-কান্নার স্মৃতি বিজড়িত দিনগুলো আজো মনে চির জাগরুক। ২০০৭ এর শেষে সেমিনারী জীবন ছেড়ে আসার পর পান্থনিবাসে আর যাওয়া হয় নি, অনেকবার মনে করেও শেষ পর্যন্ত যেতে পারি নি। তবুও মাঝে মাঝে মনের পাতায় আপনা আপনি স্মৃতির তর্পণ হতো। আজ তাই সেমিনারী বন্ধ হয়ে গেল শুনে মনটা বিষাদে ভরে গেল।

May 12, 2018

Islamic revival threatens Bangladesh's identity

Protesters in Dhaka, Bangladesh demanding the death penalty for war criminals in this file photo. (Photo by Mehdi Hasan Khan)
Four decades is enough for an independent nation to determine its true identity. 
However, recent political manoeuvrings, gradually influenced by a small but strong group of Islamist hardliners and a lethal rise of radicalism in recent years, show the struggle for a true national identity for Bangladesh is intensifying. 
Major political parties vie for power by appeasing hardliners and their supporters, while an increasingly authoritarian government tries to solidify power with unfair policies and laws disregarding democracy and greater public interests.
Militancy has weakened amid a crackdown by the government, but it has not withered as a recent event proves. 

No relief for minorities in Bangladesh as crisis looms


In some senses the term "minority" is disparaging as it denotes the weakness or powerlessness of a group. It also indicates that a group is inferior to another party and instills in that group a perpetual inferiority complex while implying it can expect to be further neglected and marginalized.
Yet being in a minority for many people and groups is an everyday reality, be it in a religious, ethnic, socio-economic or political sense.
Bangladesh has two major groups of minorities — religious and ethnic — who are visibly more weak and powerless, inferior and disenfranchised than the economically, politically and numerically dominant Muslim majority. 

Mar 26, 2018

দা‌য়িত্বশীল স্বাধীনতা





স্বাধীনতা মা‌নে স্ব অধীনতা বা নি‌জের অ‌ধিকার ও সিদ্ধান্ত গ্রহ‌ণের নিরংকুশ ক্ষমতা। কিন্তু ব্যাপক অ‌র্থে স্বাধীনতা হ‌লো নি‌জের অ‌ধিকার ভোগ করা ও অন্য‌কে তা ভোগ কর‌তে দেয়ার চা‌বিকা‌ঠি। অার স্বাধীনতার অপর পি‌ঠে র‌য়ে‌ছে দা‌য়িত্বশীলতা। বলা হ‌য়ে থা‌কে, অাপনার স্বাধীনতা ততটুকুই যতটুকু অাপ‌নি হাত ও পা ছুঁড়‌তে পা‌রেন। অাপ‌নি রাস্তায় দাঁ‌ড়ি‌য়ে ই‌চ্ছেম‌তো হাত ও পা ছুঁড়‌তে পা‌রেন, কেউ বাঁধা দেবে  না, কারণ এটা করার স্বাধীনতা বা অ‌ধিকার অাপনার র‌য়ে‌ছে। কিন্তু অাপনার হাত ও পা যেন অন্য‌কে অাঘাত না ক‌রে, কারণ সেটুকু অাপনার স্বাধীনতা এখ‌তিয়া‌রে প‌ড়ে না। স্বাধীনতা যেন স্বেচ্ছাচা‌রিতা না হ‌য়ে ও‌ঠে সেটা বজায় রাখার দা‌য়িত্ব সক‌লের, য‌দিও স্বাধীন বাংলা‌দে‌শে তার ন‌জির অামরা খুব একটা দেখ‌তে পাই না, কারণ স্বাধীনতা ও দা‌য়িত্বশীলতা অা‌জো অামা‌দের মজ্জাগত হয় নি অার স্বাধীনতা ও স্বেচ্ছাচ‌ারিতার পার্থক্য অামা‌দের মগ‌জে অল্পই ধারণ কর‌তে পে‌রে‌ছি। অামা‌দের পূর্বপুরু‌ষেরা এক‌টি স্বাধীন দেশ উপহার দি‌য়ে গে‌ছেন, বহু ত্যাগ ও ব‌লিদা‌নের বি‌নিম‌য়ে। স্বাধীনতা মূল্যবান সম্পদ, অার তাই স্বাধীনতা‌কে অপব্যবহার ক‌রে যা‌চ্ছেতাই ক‌রে বেড়া‌লে অামা‌দের পূর্বসুরী‌দের অপমান করা হয়। এজন্য ই‌তিহাস কোন‌দিন অামা‌দের ক্ষমা কর‌বে না। অার তাই এবা‌রের স্বাধীনতা দিব‌সে শপথ নেই-- স‌ত্যিকা‌রের স্বাধীন হ‌বো, অন্য‌কে স্বাধীন কর‌বো, নি‌জে দা‌য়িত্বশীলভা‌বে স্বাধীনতা ভোগ কর‌বো, ও অন্য‌কে তা ভোগ কর‌তে সহায়তা কর‌বো।

Mar 11, 2018

Rohingya repatriation plan not sustainable

Plan to send refugees back to Myanmar lacks foresight as they are still unwelcome in Rakhine State (Photo: Stephan Uttom/ucanews.com)

The world's most unloved people, the most persecuted, the godforsaken — call the Rohingya Muslims by whatever name you prefer.
Those born in Rakhine State in Buddhist-majority Myanmar are unwanted in their place of birth and equally unwelcome in Muslim-majority Bangladesh.
They seem like left-out pages of history, as they cannot call the place they were born "home" in any true sense of the word despite their historical presence there being enshrined in the 2,000-year-old Arakan kingdom (located where Rakhine now lies) as early as the 8th century. 

Mar 8, 2018

নির্যাতন, অবহেলা ও নীরবতা: রোহিঙ্গা সংকটের নেপথ্যে

Rohingya refugees in Cox's Bazar in September, 2017 (Photo: Stephan Uttom)

মায়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জাতিগত নি:স্বকরণ (Ethnic Cleansing) প্রক্রিয়ার সঙ্গে রুয়ান্ডার তুতসি জনগোষ্ঠীর গনহত্যার ব্যাপক ধরণের সাদৃশ্য রয়েছে। তুতসি গণহত্যা (Genocide) আধুনিক বিশ্বে সংঘটিত সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম।

১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল থেকে জুলাই মাসে এ গণহত্যা সংঘটিত হয়। রুয়ান্ডার সংখ্যাগরিষ্ঠ হুতু সম্প্রদায়ের জঙ্গীগোষ্ঠী ও হুতু সমর্থিত সরকারের সেনাবাহিনীর হাতে এ সময়কালে প্রায় ১০ লক্ষ সংখ্যালঘু তুতসি হত্যাকান্ডের শিকার হয়।

এ গণহত্যা ছিল মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় সুদীর্ঘকাল ধরে চলা জাতিগত বিদ্বেষ ও সহিংসতার চরম ও নিষ্ঠুরতম পর্যায়।

Feb 9, 2018

Bangladesh faces spring of discontent ahead of election

Bangladesh Nationalist Party (BNP) leader Khaleda Zia speaks at a press conference in Dhaka on Feb. 7. She proclaimed her innocence of corruption ahead of a court verdict that authorities fear could spark violence. (Photo by Munir Uz Zaman/AFP)
February is one of the most pleasant months in Bangladesh. Besides enjoyable weather, it features a month-long book fair and a commemoration program dedicated to Language Movement heroes of Feb. 21, 1952. It also showcases the colorful spring festival, Valentine's Day and many other cultural feasts.    
But this year, February has come to make Bangladeshis visibly tense and scared.
After a few years of relative peace and stability, Bangladesh is bracing for a political storm poised to hit the entire Muslim-majority nation of 160 million.
A Dhaka court is due to deliver a verdict on Feb. 8 in a corruption case against Khaleda Zia, chief of the Bangladesh Nationalist Party (BNP), the second largest political party. 

Jan 27, 2018

রাগী লোক, ভা‌লো লোক


Photo Credit: knowledge.instead.edu
ভা‌লো লোক কড়া ও রাগী চ‌রি‌ত্রের হ‌য়ে থা‌কে। কারণ তারা অন্যায়, অসঙ্গ‌তি ও বিশৃংখলা বরদাশত কর‌তে পা‌রে না, কাউ‌কে সন্তুষ্ট করার জন্য মিথ্যাচার ক‌রে না, অাত্নতু‌ষ্টির জন্য মিথ্যা প্রশংসাও হজম ক‌রে না।

একজন ম‌নিষী ব‌লে‌ছেন, "যার রাগ বে‌শি সে নীর‌বে অ‌নেক ভা‌লোবাস‌তে জা‌নে।" প্রয়াত কথাসা‌হি‌ত্যিক হুমায়ূন অাহ‌মেদ ব‌লে গে‌ছেন, "রাগী মানুষই ভা‌লো মানুষ, অার যারা শয়তান তারা লা‌থি খে‌য়েও মিচকা হা‌সি দি‌তে পা‌রে।" রাগ একটা শ‌ক্তি, যে তা স‌ঠিকভা‌বে ব্যবহার কর‌তে জা‌নে, সে জীব‌নে সফল হ‌তে সক্ষম। যেমন অাগুন দি‌য়ে বা‌তি জ্বালা‌নো যায়, রান্না করা যায়, অাবার অাগুন দি‌য়ে ঘরও পোড়া‌নো যায়। সুতরাং কে কীভা‌বে রাগ‌কে ব্যবহার কর‌বে তার উপর ভা‌লো বা মন্দ ফলাফল নির্ভর কর‌বে। অাপ‌নি য‌দি রাগী লোক হন তা‌তে সমস্যা নেই, এর উপযুক্ত ব্যবহার করুন।

এক‌টি শিক্ষনীয় গল্প এখা‌নে প্র‌ণিধান‌যোগ্য। এক হাইস্কু‌লে দুই বন্ধু পড়া‌শোনা কর‌তো, একজন বু‌দ্ধিমান অার অন্যজন কিছুটা বোকা স্বভা‌বের। দুজ‌নের কা‌রোই পড়া‌শোনায় তেমন ভা‌লো ছি‌লো না, কারণ পড়া‌শোনা বা‌দে অন্য সব‌কিছু, যেমন, মাছ ধরা, পা‌খি শিকার করা, বাজ‌া‌রে যাওয়া, সি‌নেমা দেখা ও খেলাধুলা করা সবটা‌তেই  তা‌দের প্রচুর অাগ্রহ ছি‌লো। দশম শ্রেণী‌তে ১ম ও ২য় সাম‌য়িক দুইজনই সব বিষ‌য়ে ফেল কর‌লো। প্রধান শিক্ষক দুইজন‌কে ডে‌কে অাচ্ছাম‌তো তিরস্কার কর‌লেন, এবং বল‌লেন, "‌তোমরা দুই গাধা, তোমা‌দের পড়া‌শোনা যা হাল তা‌তে অাগামী দশ বছ‌রেও ‌তোমরা এসএস‌সি পাশ কর‌তে পার‌বে না।" তিরস্কারের ফলশ্রু‌তি‌তে দুইজ‌নের দুইরকম প্র‌তি‌ক্রিয়া হ‌লো। বু‌দ্ধিমান বন্ধু‌টির খুব রাগ ও অপমান‌বোধ হ‌লো। যে ম‌নে ম‌নে জেদ কর‌লো সে তার শিক্ষক‌কে ভুল প্রমাণ ক‌রে ছাড়‌বে এবং এক চা‌ন্সেই পাশ ক‌রবে। সে ব্যাপকভা‌বে পড়া‌শোনা শুরু কর‌লো। অার বোকা বন্ধু রাগ ও জেদ ক‌রে পড়া‌শোনা একপ্রকার বন্ধই ক‌রে দি‌লো। ফ‌লে তার অার এসএস‌সি পাশ করা হ‌লো না কোন‌দিন।

সুতরাং এখন বি‌বেচনার বিষয় অা‌মি বা অাপ‌নি কোন বন্ধুর দ‌লে পড়‌তে চাই। রাগ ক‌রে ক‌রে যে ভা‌লো কিছু ক‌রে সে যেমন লো‌কের শ্রদ্ধা ও সম্মান অর্জন কর‌তে পা‌রে, কিন্তু যে কিনা রা‌গের ব‌শে নি‌জের ও অ‌ন্যের ক্ষ‌তি ক‌রে, তার নি‌জের জীব‌নে তো উন্ন‌তি হয়ই না বরং তার প‌রিবার ও সমাজ তা‌তে ক্ষ‌তিগ্রস্ত হয়, সক‌লের নিকট সে অবজ্ঞার পা‌ত্রে প‌রিণত হয়।।

Jan 25, 2018

ন্যায্যতা, মানবাধিকার ও শান্তি


Justice, Human Rights and Peace. Photo: Justice and Peace Foundation, Archdiocese of Kingston, Canada

সমাজে বসবাসকারী সকল মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের সাথে ন্যায্যতা, মানবাধিকার ও শান্তি নিবিড়ভাবে জড়িত। সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যদিও সবাই সমানভাবে জন্মগ্রহণ করে না, তথাপি মানব মর্যাদার দিক থেকে সকলেই সমান অধিকার লাভের যোগ্য। “যা সিজারের তা সিজারকেই দাও! আর যা ঈশ্বরের, তা ঈশ্বরকেই দাও (মথি ২২:২১)।” মানবপ্রেমী যীশুখ্রীষ্টের এই অসাধারণ বাণীর মাঝেই ন্যায্যতা ও মানবাধিকার সংক্রান্ত সকল প্রশ্নের উত্তর নিহিত আছে। ন্যায্যতা মানে হলো ব্যক্তি মানুষের মর্যাদা দেওয়া এবং তার মানবাধিকার মৌলিক অধিকারের প্রতি ন্যায়ানুগ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা। অর্থাৎ সহজ কথায়, যার যা প্রাপ্য তা তাকে প্রদান করাই হচ্ছে ন্যায্যতা।

Jan 18, 2018

জলবায়ু পরিবর্তন ও বাংলাদেশ

Photo: Stephan Uttom/ucanews.com

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর ফলে সৃষ্ট সমস্যাবলী অন্যতম প্রধান আলোচিত বিষয় মূলত মানবসৃষ্ট কারণে উদ্ভুত এই সর্বনাশা পরিবর্তনের হেতু বাংলাদেশ ও বিশ্বের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশ ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখিন। সাম্প্রতিক বন্যা, তীব্র শীত সবই এ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঘটছে বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মত। তারা আরও একটি আশংকাজনক তথ্য দিয়েছেন যে, আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে গ্রীন হাউজ গ্যাসের মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধির ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে সমুদ্রপৃষ্ঠ ৮৮-৮৯ সে.মি বৃদ্ধি পাবে। ফলে মালদ্বীপের মত ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যাবে এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় ২০টি জেলা ডুবে যাবে, প্রায় ২ কোটি মানুয বাস্তুহারা হয়ে পড়বে।

Jan 14, 2018

একজন আদর্শ সমবায়ীর খোঁজে

Photo: Piyas Biswas/ucanews.com

ছেলেবেলাতেই মিতব্যয়ীতা ও সঞ্চয় শব্দযুগলের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল; কিন্তু যতদূর মনে পড়ে হাইস্কুলে পড়ার আগে বোধহয় এসবের মানে ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারি নি ।

খুব সম্ভবত ক্লাশ সেভেন/এইটের বইয়ে একটা চমৎকার শিক্ষণীয় গল্প ছিল- Mr. Ant and Mr. Grasshopper (মি. পিঁপড়া ও মি. ফড়িং) । পিঁপড়া ও ফড়িং দুজনে প্রতিবেশী, কিন্তু দুজনের চরিত্রে মিলের চেয়ে অমিলই বেশি । পিঁপড়া খুবই পরিশ্রমী, মিতব্যয়ী ও দূরদর্শী, অন্যদিকে ফড়িং কুঁড়ের হদ্দ, বেহিসাবী ও ভবিষ্যতের ভাবনা-চিন্তাহীন । প্রতিদিন পিঁপড়া কঠোর পরিশ্রম করে খাদ্য জোগাড় করত আর ফড়িং মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াত, মাঝে মধ্যে পিঁপড়াকে তার সঙ্গে যোগ দিতে বলত, তার কথায় কান না দেয়ায় পিঁপড়াকে ‘বোকা’ ‘গাধা’ বলে গালমন্দ করতেও ছাড়ত না । শীতকাল সন্নিকট হলে পিঁপড়া শীতের খাদ্য সঞ্চয়ে তার কাজের মাত্রা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিল, সে এমনকি ফড়িংকেও সে খাদ্য জোগাড়ের পরামর্শ দিল । কিন্তু ফড়িং তাতে কোন কান দিল না, সে আগের মতই গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়াতে লাগল । সে বছর বেশ আগে-ভাগেই শীত পড়তে শুরু করল এবং ক্রমশই ভয়াবহ ঠান্ডা পড়ল । ফড়িংয়ের ঘরের খাদ্য দ্রুত নি:শ্বেষ হয়ে গেল, কারণ সে সময়মত তেমন কিছুই সঞ্চয় করে নি । ক্ষুধার্ত ও অবসন্ন অবস্থায় সে তখন পিঁপড়ার কাছে গেল খাবার চাইতে, কিন্তু পিঁপড়া তাকে ফিরিয়ে দিয়ে বলল, “আমি যে পরিমাণ খাদ্য মজুদ করেছি তা দিয়েই গোটা শীতকাল পার করতে হবে । তোমাকে খাবার দিলে শেষে আমাকেই না খেয়ে মরতে হবে ।” হতাশ ফড়িং ফিরে গেল, এবার তার আফসোস হতে লাগল ‘ইস! কেন যে সময়মত খাবার জোগাড় করে রাখলাম না?’ এসব ভাবতে ভাবতেই অনাহারে দুর্বল হয়ে একসময় ফড়িং মারা গেল ।

Jan 13, 2018

Liberal and Reformist Pope Francis

Pope Francis (Photo: www.telegraph.co.uk)
Pope Francis, the supreme leader of world's 1.2 billion Catholic Christians, is visiting Bangladesh. Francis is the third pope to visit this land after Pope Paul VI on Nov. 26, 1970 and Pope John Paul on Nov. 19, 1986.

Pope Francis beholds a liberal worldview that includes everyone and excludes none.
A prolific change-maker, Pope Francis is determined to turn the Church "a guiding light and moral conscience" in an ultramodern and increasingly secular world.

  
On 13 March 2013, as he emerged as pope, he renounced traditional red papal mozetta, and worn a simple white cloak and a wooden cross. Thus, he sent out strong signals that he was there for change. 



দক্ষিণ এশিয়ায় ভোটের রাজনীতি এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়

Bangladeshi Christians who account for less than half percent of some 165 million inhabitants in the country pray during an Easter Mass in D...